ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় তথাকথিত ‘জঙ্গি দমনের’ নামে কেন্দ্রশাসিত মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটির বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি ও চিরুনি অভিযান শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বাহিনী। এ সময় কাশ্মিরের মুসলিম এলাকাগুলোতে নির্যাতন ও দমন-পীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর তল্লাশি অভিযান শুরু হয়, যা এখনো বিভিন্ন এলাকায় অব্যাহত রয়েছে। নিরাপত্তা তল্লাশির নামে অঞ্চলটির বেসামরিক নাগরিকদের ঘরে ঢুকে পড়ার খবর শোনা গেছে। 

কাশ্মিরে নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনা করা ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করেছে,শুক্রবার সকালে এক সামরিক অভিযানে কাশ্মীরের বান্দিপোরায় ‘কথিত’ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার শীর্ষ কমান্ডার আলতাফ লাল্লিকে হত্যা করা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্য, অভিযানের সময় কথিত ওই সংগঠনের সদস্যরা সেনাবাহিনীর উপর হামলা চালায়, এ সময় পালটা জবাব দেয় সেনারা। এতে ‘লস্কর জঙ্গি কমান্ডার’ আলতাফ নিহত হন। তার কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়া পেহেলগাম হামলার সাথে জড়িত সন্দেহে আসিফ শেখ নামের আরেক মুসলিম নাগরিকের বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। মোগামায় তার বাড়িতে তল্লাশি করার সময় একটি সন্দেহজনক বাক্স পাওয়া যায়, যা একটি বোমার অংশ ছিল। পরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেটি নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

অপরদিকে, পেহেলগাম হামলায় জড়িত সন্দেহে বুলডোজার দিয়ে আদিল ঠোকর নামে আরও এক মুসলিম নাগরিকের বাড়ি ধ্বংস করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আদিলের ব্যাপারে ভারতীয় মিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়— আদিল ২০১৮ সালে পাকিস্তানে গিয়ে ‘জঙ্গি’ প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং ২০২৪ সালে কাশ্মীরে ফিরে আসে। প্রতিবেদন মতে, ‘আদিল ও আসিফ ছাড়াও হামলায় আরও দুই পাকিস্তানি জঙ্গি অংশ নিয়েছিল।’

নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ‘পেহেলগাম এলাকায় এখনো দুই জঙ্গি লুকিয়ে রয়েছে। তাদের ধরতে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে এবং তল্লাশি জোরদার করা হয়েছে। এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে ওই দুই জঙ্গি গ্রেফতারের জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে।’